মারা যাবার ৬ ঘন্টার ভেতর চোখ/কর্ণিয়া সংগ্রহ করতে হয়, তাই চক্ষুদাতা মারা যাবার কিছুক্ষনের মধ্যে অভিভাবকরা সন্ধানীর সাথে যোগাযোগ করুনঃ 01511555567 অথবা 01785777744
মরণোত্তর চক্ষুদান কী?
মরণোত্তর চক্ষুদান হলো মৃত্যুর পর কর্নিয়া দান করার জন্য জীবিত অবস্থায় অঙ্গীকার করা। মৃতের চোখের কর্নিয়া সংগ্রহ করে অন্যজনের চোখে লাগানোর ইচ্ছা ও সম্মতিই ‘মরণোত্তর চক্ষুদান’ নামে পরিচিত। উল্লেখ্য, মৃত্যুর পরও মৃত ব্যক্তির বৈধ অভিভাবকেরাও কর্নিয়া দান করতে পারেন।কর্নিয়া হলো চোখের সামনের স্বচ্ছ অংশ, যার মাধ্যমে আলো চোখের মধ্যে প্রবেশ করে। যদি কোনো কারণে কর্নিয়া অস্বচ্ছ হয়ে যায়, তাহলে ওই চোখে আলো প্রবেশ করতে পারে না। ওই চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থাকে কর্নিয়াজনিত অন্ধত্ব বলা হয়।
বাংলাদেশে বর্তমানে কর্নিয়াজনিত কারণে অন্ধত্বের সংখ্যা পাঁচ লক্ষাধিক, যার বেশির ভাগ অল্পবয়স্ক। চোখ হল একজন মানুষের পাওয়া সর্বোচ্চ আশীবার্দ এবং শ্রেষ্ঠ উপহার। দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্যক্তি কর্মক্ষমতা হারিয়ে পরিবার তথা সমাজের বোঝা হয়ে দাঁড়ায় এবং সক্ষম হওয়ার পরও অসম্পূর্ণ জীবন বয়ে বেড়ায়। চক্ষুদান- ক্ষুদ্র মানবজীবনকে করে তোলে তাৎপর্যপূর্ণ্ মৃত্যুর পরও অনন্তকালের সৌন্দর্য উপভোগ করার, আরেকটা জগৎ আলোকিত করে তোলার মহৎ ক্ষমতা চক্ষুদানের।এতে কোনো কাটাকাটি নেই। রক্তপাতের বা চেহারা বিকৃতির কোনো আশংকাও নেই। তারপরও মৃত ব্যক্তির কর্নিয়ার স্থানে সিনথেটিক একটা পর্দা লাগিয়ে দেয়া হয়, যাতে কোনো অবস্থায়ই বোঝা সম্ভব না হয় যে চোখের পর্দা দান করা হয়েছে। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি মাত্র কয়েক মিনিটেই সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।
কেন “মরণোত্তর চক্ষুদান” করা উচিত?
কারা “মরণোত্তর চক্ষুদান” করতে পারবেন?
মরণোত্তর চক্ষুদানের মাধ্যমে একজনের চোখ দিয়ে অন্যজন পৃথিবীর আলো দেখতে পারে। বাংলাদেশে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ অন্ধত্বের শিকার এবং এর মাঝে ৫ লাখ মানুষ হলেন কর্ণিয়া নষ্টের কারনে অন্ধত্বের শিকার। কর্ণিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে খুব সহজে এই ৫ লাখ মানুষের অন্ধত্ব মোচন সম্ভব। কিন্তু সচেতনতার অভাবে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে চক্ষুদান কার্যক্রমে। তাই অন্ধ মানুষেরা অন্ধকার জগতে অসহায় জীবন পার করছেন। মরণোত্তর চক্ষুদানের মাধ্যমেঃ
- একজন অন্ধ মানুষকে ফিরিয়ে দিতে পারে আলোর জগত। একজন মানুষ ফিরে পায় দৃষ্টিশক্তি, ফিরে পায় নতুন জীবন, ফিরে পায় সুস্থ জীবনের সৌন্দর্য।
- চক্ষুদাতা অমর হয়ে থাকেন অন্যের চোখের মাধ্যমে।
- অন্যকে নতুন জীবন দানের মাধ্যমে মনুষ্য জীবন সার্থক হয়ে উঠে চক্ষুদাতার।
যে কেউ চাইলেই চোখ দান করতে পারে। চোখে ছানি পড়া, হ্রস্ব দৃষ্টি অথবা বয়স—কোনোটাই মরণোত্তর চক্ষুদানের ক্ষেত্রে বাধা নয়। তবে যেসব ব্যক্তি Hepatitis, AIDS, Encephalitis, Rabies, Septicemia, Retinoblastoma, Leukemia, Lymphoma, End stage of cancer , Creutzfeldt Jakob Disease প্রভৃতি রোগের কারণে মৃত্যুবরণ করে, তাদের মরণোত্তর চক্ষুদানের জন্য অনুপযুক্ত ধরা হয়।
বাংলাদেশের আইন এবং ধর্মীয় বিধান কি বলে?
মানব দেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন (সংশোধন) আইন ২০১৮ সনের ৫নং আইনের ধারা-৫ মোতাবেক “চক্ষু বিযুক্তকরণের ক্ষেত্রে মৃতদেহ অন্য ব্যক্তির নিকট বা প্রতিষ্ঠান বা স্থানে থাকিলে উক্ত ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান বা স্থান যে জেলা প্রশাসকের প্রশাসনিক এখতিয়ারাধীন তিনি বা ক্ষেত্রমত, তাহার নিকট হইতে এতদুদ্দেশ্যে লিখিতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি যদি অনুরূপ বিযুক্তির জন্য লিখিত অনুমতি প্রদান করেন।”
সুতরাং বাংলাদেশে বিদ্যমান আইন মোতাবেক যে কোন ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় কিংবা মৃত্যুর পর তার আইনানুগ নিকট আত্মীয়ের অনুমতি সাপেক্ষে মরণোত্তর চক্ষুদান বিধি সম্মত।
১৯৬৬ সালে মিশরের সর্বোচ্চ মুফতি প্রথম অংগ-প্রত্যঙ্গ দানের জর্ডান এবং ১৯৭৯ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে আলেমদের সর্বোচ্চ কাউন্সিল চিকিৎসার প্রয়োজনে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান এবং প্রতিস্থাপনের পক্ষে ফতোয়া জারী করে। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৫ সালে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে অনুষ্ঠেয় মুসলিম লীগের ফিকাহ্ একাডেমীর ৮ম সভায় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান ও প্রতিস্থাপন ইসলাম ধর্মের সাথে সংগতিপূর্ণ বলে মতামত প্রদান করে। ১৯৮৬ সালে জর্ডানের আম্মানে অনুষ্ঠেয় অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কাউন্সিলের ফিকাহ্ কাউন্সিল এর সভায়অঙ্গ-প্রত্যঙ্গদানের স্বপক্ষে (জীবিত এবং মৃত্যুর পর) আদেশ জারী করে (আদেশ নং- ৩/০৭/৮৬)। সিরিয়া, মিসর, মরক্কো, তিউনিশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ইত্যাদি দেশে বিশেষ করে আলেমদের অংশগ্রহণে চক্ষুদানের মহৎ ধারা ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে। ওআইসি মরণোত্তর চক্ষুদানকে অনুমোদন দিয়েছে। মুসলিম প্রধান দেশগুলোতে দিনদিন চক্ষুদান জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
বৌদ্ধধর্মে চক্ষুদানের সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। খ্রিষ্টধর্মে বা হিন্দুধর্মেও চক্ষুদানের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।
মরণোত্তর চক্ষুদান প্রক্রিয়া
জীবিত অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ নারী-পুরুষ মরণোত্তর চক্ষুদানে অঙ্গীকার করতে পারেন। পরিচিত মানুষদের চক্ষুদানের বিষয়টি আগে থেকেই অবগত করে রাখতে হবে, যাতে দাতার মৃত্যুর পর তাদের মধ্যে দায়িত্বশীল কেউ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে দ্রুত অবগত করতে পারেন- সে বিষয়টি দাতাকেই নিশ্চিত করে যেতে হবে।
- যে কেউ ইচ্ছা করলে মরণোত্তর চক্ষুদান করতে পারবে।
- মরণোত্তর চক্ষুদান করতে হলে “সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি” প্রদত্ত কার্ড পূরন করে জমা দিতে হবে। Eye donor card-এ চক্ষুদাতার স্বাক্ষর থাকতে হবে। SIEB একটি Pocket Eye donor Card প্রদান করবে। আমাদের ওয়েবসাইটের Pre-Registration ফর্ম পুরণ করুন। “সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি” আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।
- যারা মরণোত্তর চক্ষুদান করে তাদের পরিবারকে চক্ষুদান সমিতি বিভিন্ন রকম সুবিধা প্রদান করে থাকে। ডোনারদের পরিবারের সদস্যদের পরবর্তীতে চক্ষু লাগলে তারা যথাসম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করে।
- সাধারণত মরণোত্তর চক্ষুদানকারীর মৃত্যু সংবাদ তার পরিবারের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়।
- মরণোত্তর চক্ষুদানকারীর মৃত্যুর ৬ থেকে ৮ ঘন্টার মধ্যে চক্ষু সংগ্রহ করতে হয়।
- চক্ষুদান করতে সর্বমোট চার জন স্বাক্ষীর প্রয়োজন হয়। দুইজন হল দাতার পরিবারের সদস্য এবং বাকি দু’জন পরিবারের বাইরের যারা দাতাকে সনাক্ত করতে পারেন।
কেন “মরণোত্তর চক্ষুদানে” আমরা পিছিয়ে?
আমাদের দেশে কর্নিয়া সংগ্রহে যেসব বাধা রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলোঃ
- জনসাধারণের মাঝে মরণোত্তর কর্ণিয়াদানে সচেতনতার অভাব
- সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার
- পেশাগত চক্ষুব্যাংকের অভাব
আমাদের সবার করনীয়ঃ
- চক্ষুদান সম্পর্কে অবগত হওয়া
- চক্ষুদানে অঙ্গীকার করা
- অন্যকে চক্ষুদানে উৎসাহিত করা
অনেকে চক্ষুদান বিষয়ে নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগে। এর মূল কারণ সচেতনতার অভাব অথবা ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা। এ জন্য অনেকে চক্ষুদান করার ব্যাপারে সম্মতি দিলেও নিকটাত্মীয়রা মৃত ব্যক্তির অঙ্গ নেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারে না। এ ক্ষেত্রে দরকার ব্যাপক মোটিভেশন। আর এই মোটিভেশনের কাজটি করার দায়িত্ব আপনার, আমার, সবার। কেননা আপনার, আমার একটু সদিচ্ছায় একজন পেতে পারে তার দৃষ্টিশক্তি।আসুন, রক্তদানের মতো মরণোত্তর চক্ষুদানেও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হই। এ বিষয়ে সরকার, গণমাধ্যম, স্বেচ্ছাসেবীসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
পরিসংখ্যান
বাংলাদেশে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ অন্ধ।
শুধুমাত্র কর্ণিয়াজনিত অন্ধের সংখ্যা পাঁচ লক্ষাধিক।
প্রতিবছর এর সাথে নতুন করে যোগ হচ্ছে ৪০ হাজার।
আমরা প্রতিবছর গড়ে ৫০টি কর্ণিয়া সংগ্রহ করতে পারি।
এভাবে চলতে থাকলে দেশের কর্ণিয়াজনিত অন্ধত্ব দূর করতে প্রায় ৬ (ছয়) হাজার বছর লাগবে।
“মরণোত্তর চক্ষুদানে” অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন
১৯৮৪ সালে চক্ষু সংগ্রহের কাজ শুরুর পর সন্ধানী চক্ষুদান সমিতি’র মাধ্যমে মরণোত্তর চক্ষু দান করার মৌখিক অঙ্গীকারাবন্ধ হয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়াও মরণোত্তর কর্নিয়া দানের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, অভিনেত্রী সারা যাকের, সুবর্ণা মুস্তফা, কণ্ঠশিল্পী মেহরীন ও কৃষ্ণকলিসহ এ পর্যন্ত মোট ৩৬ হাজার মানুষ।
আব্দুল হামিদ
মহামান্য রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশ
শেখ হাসিনা
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ
বদরুদ্দোজা চৌধুরী
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশ
ডা. দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাংলাদেশ
ডা. আ ফ ম রুহুল হক
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বাংলাদেশ
আসাদুজ্জামান নূর
অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশ
সারা যাকের
অভিনেত্রী
সুবর্ণা মুস্তফা
অভিনেত্রী
আলী যাকের
অভিনেতা
মেহরীন
কণ্ঠশিল্পী
কৃষ্ণকলি
কণ্ঠশিল্পী
Amitabh Bachchan
অভিনেতা
Aamir Khan
অভিনেতা
Aishwarya Rai
অভিনেত্রী
Hrithik Roshan
অভিনেতা
ABOUT US
The Sandhani National Eye Donation Society (SNEDS) is a charity-based eye donation center which was established in 1977 by students at the Dhaka Medical College Hospital (DMCH).
Read More...
CALL SANDHANI
অভিভাবকরা মৃত ব্যাক্তির চক্ষুদানের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মারা যাবার ৬ ঘন্টার ভেতর চোখ/কর্ণিয়া সংগ্রহ করতে হয়, তাই চক্ষুদাতা মারা যাবার কিছুক্ষনের মধ্যে অভিভাবকরা সন্ধানীর সাথে যোগাযোগ করুনঃ 015115555567 অথবা 01785777744
Contact Us
Office:
Sandhani Bhaban, 33/2, Babupura Road, Nilkhet, New Market, Dhaka-1205
Call Us:
+8801711287108, +880711488614